গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়? জেনে নিন সহজ সমাধান

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় তা নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই। কিছু খাবার আছে যা শুধু গর্ভাবস্থায় নয় যখন থেকে একজন মা সন্তান ধারণের চিন্তা করছেন, তখন থেকেই খাওয়া উচিত। যা বাচ্চাকে বুদ্ধিমান করে তুলতে সহায়তা করবে। 

গর্ভাবস্থায়-কি-খেলে-বাচ্চা-বুদ্ধিমান-হয়

সন্তান জন্মের পরেও প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে বাচ্চার মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারবেন। সন্তান বুদ্ধিমান হওয়ার স্বপ্ন আমরা সকলেই দেখি। তবে এটি অনেকাংশে নির্ভর করে গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য অভ্যাস এর উপর।

পেজ সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় তা জানা আমাদের সবার জন্যই জরুরী। গর্ভাবস্থায় মা যদি সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ না করেন তাহলে এর প্রভাব সন্তানের উপরও পড়তে পারে। যার ফলে সন্তানের মানসিক অক্ষমতার সৃষ্টি হতে পারে। গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে। বিশেষজ্ঞদের মতে. বাচ্চা কতটা বুদ্ধিমান হবে তা গর্ভাবস্থায় মায়ের খাওয়া দাওয়ার উপর নির্ভর করে।সন্তান যেন সুস্থ বুদ্ধিমান ও মেধাবী হয় সে স্বপ্ন প্রত্যেক বাবা মার-ই থাকে। 

গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্য অভ্যাস এর উপর এটি নির্ভর করে। আমাদের পরিবেশ ও খাদ্যাভ্যাস এর পরিবর্তনের সাথে গর্ভ অবস্থায় বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশেরও পরিবর্তন হয়। সব সময় বেশি বেশি খাবার না খেয়ে কি খেলে বাচ্চার বুদ্ধির বিকাশ ঘটবে সেটা দেখতে হবে। গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ব্রেনের ২৫ শতাংশ বিকাশ ঘটে। গর্ভাবস্থায় খাবারের তালিকা এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন বাচ্চার এই ২৫ শতাংশ বিকাশ গর্ভাবস্থায়ই সম্পন্ন হয়। 


ভ্রুনের বিকাশ সাধারণত শুরু হয় ২৮ দিন পর থেকে। যখন নিউরাল টিউব গঠিত হয়। এই সময় মাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। শিশুর জন্মের পর যখন মায়েরা দুধ পান করান তখন শিশুর মস্তিষ্কে বাকি ৭৫ শতাংশ বিকশিত হয়। তাই অবশ্যই গর্ভাবস্থায় এবং বাচ্চার জন্মদানের পরেও মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

যদি আপনি বুদ্ধিমান ও মেধাবী সন্তান চান তাহলে আপনাকে বাচ্চার মস্তিষ্ক গঠনের উপর বিশেষ নজর দিতে হবে। গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় এই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্যই যে খাবারগুলো খাওয়া উচিত তার মধ্যে রয়েছে- ডিম, মাছ, মাংস, সবুজ শাক-সবজি, দুগ্ধ জাত খাবার, কলা, বাদাম, শস্য জাতীয় খাবার, কমলা লেবু, টমেটো, অ্যাভোকাডো, ডার্ক চকলেট, আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- সামুদ্রিক মাছ, কলিজা, চিংড়ি, ভুট্টা, দই ইত্যাদি।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার বুদ্ধি বাড়ানোর জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার বুদ্ধি বাড়ানোর জন্য অবশ্যই মাকে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। চলুন জেনে নেই প্রোটিন সমৃদ্ধ কোন খাবার গুলো খেলে বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হয়।
  • ডিমঃ গর্ভাবস্থায় বা বাচ্চাকে দুগ্ধদানের সময় মাকে অবশ্যই ডিম খেতে হবে। কারণ ডিম বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়তা করে এবং শিশুকে বুদ্ধিমান করে তুলতে সহায়তা করে। ডিমে রয়েছে কোলিন, ফ্যাটি এসিড, প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ, বায়ো একটিভ যৌগ সমূহের মিশ্রণ। যা ভ্রুণের মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিন অন্তত দুইটি করে সিদ্ধ ডিম খাওয়া উচিত। তাদের সিদ্ধ ডিম খেতে সমস্যা হয় তারা ডিমের অন্য রেসিপি করে খেতে পারবেন। যেমন- পুডিং, হালুয়া, মাফিন ইত্যাদি।
  • মাংসঃ গর্ভাবস্থায় মাংস খেলে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ দ্রুত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে মাংসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, জিঙ্ক এবং ভিটামিন বি-12 রয়েছে। যা বাচ্চার মস্তিষ্ক গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। জিংক শিশুর শরীরে ডিএনএ এর একটি অংশ গঠন করতে সহায়তা করে এবং ব্রেনের নিউরোট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে। 
ভিটামিন বি-12 শিশুর মস্তিষ্কে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। নিয়োসিন নামক যৌগ বাচ্চার জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • মাছঃ সামুদ্রিক মাছ যেমন- টুনা, ম্যাকারেল, স্যামন মাছ বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ উন্নত করে। কারণ এতে রয়েছে কোলিন, ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি এসিড ইত্যাদি। যা বাচ্চার নিউরো ডেভলপমেন্ট এর জন্য একটি অপরিহার্য অংশ। ওমেগা থ্রি বাচ্চার বিকাশের জন্য খুবই জরুরী। গবেষণায় দেখা গেছে- যেসব মায়েরা সপ্তাহে দুই দিনের বেশি মাছ খায় তাদের বাচ্চারা খুবই বুদ্ধিমান হয়।
এজন্য অবশ্যই আপনার খাবারের তালিকায় মাছ রাখুন।
  • ব্লুবেরীঃ ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি এবং রাম্পবেরি গুলোতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন বি ৬ থাকায় একে সুপারফুটে বলা হয়। তাই এই খাবারগুলো শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশেও খুবই জরুরী। যা শিশুদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
  • দুগ্ধজাতীয় খাবারঃ দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধ জাতীয় খাবার যেমন- দই ,পনির ইত্যাদি গর্ভাবস্থায় খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। দুধ এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় আয়োডিন এবং প্রোটিন সরবরাহ করে। আয়োডিনের ঘাটতি ভ্রুনের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। গর্ভাবস্থায় আয়োডিনের ঘাটতি রয়েছে তাদের বাচ্চারা স্নায়ুতিক অক্ষমতা নিয়ে জন্ম নেয়।
দুধ আয়রনেরও একটি চমৎকার উৎস। যা বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দই হল প্রোটিনের চমৎকার একটি উৎস। যাতে প্রোবায়োটিক এবং আয়োডিন থাকায় বাচ্চার স্নায়ু কোষ গঠনে সহায়তা করে। তাই আপনার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত দুধ এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবার রাখুন।

গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার

আয়রন ও ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাদাম, শুকনো ফল, কলা ইত্যাদি খাবারের প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ফলিক এসিড রয়েছে। যা বাচ্চার মস্তিষ্ক বিকাশে এবং বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে সহায়ক। এছাড়াও গর্ভধারণের পূর্বে ফলিক এসিড খেলে বাচ্চার জন্মগত ত্রুটির প্রতিরোধ সহায়ক হিসেবে কাজ করে। তাই গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরী।
  • কলাঃ কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড, যা বাচ্চার মস্তিষ্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন খাবার তালিকায় কলা রাখতে পারবেন। কলাতে আরো রয়েছে ফলিক এসিড, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি-6 এবং এটি অক্সিডেন্ট ইত্যাদি। যা আপনার খাবারের একটি ভালো সংযোজন।
  • বাদামঃ বাদামে রয়েছে স্বাস্থ্যকর স্নেহ পদার্থ, ফ্যাট, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন ই এবং প্রোটিন। যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও রয়েছে ওমেগা থ্রি এবং ফ্যাটি অ্যাসিড যা মস্তিষ্কের উন্নতি করে। গর্ভাবস্থায় মা প্রতিদিন একমুঠো করে বাদাম খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়। এছাড়াও বিভিন্ন বাদাম জাতীয় খাবার যেমন- আখরোট, পেস্তা, সূর্যমুখী, সন, চিয়া সিড, কুমরোর বীজ ইত্যাদি খাবারও নিয়মিত খেতে পারবেন।
  • শস্য খাদ্যঃ মটরশুঁটি, মসুর ডাল এবং যে কোন রকমের ডাল গুলোতে রয়েছে উচ্চমাত্রায় আয়রন, প্রোটিন, ভিটামিন বি-6,  ফোলেট ইত্যাদি। যা শিশুর মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য খুবই জরুরী। তাই ডাল জাতীয় খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় রাখুন।
গর্ভাবস্থায়-কি-খেলে-বাচ্চা-বুদ্ধিমান-হয়

গর্ভাবস্থায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার

আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় সবুজ শাকসবজি, পালং শাক, বাঁধাকপি, ব্রকলি, গাজর, টমেটো, বিন্স ইত্যাদি রাখতে পারেন। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ সহায়তা করে। বাদাম এবং কালোজামও খেতে পারেন। এগুলোতেও রয়েছে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা বাচ্চার স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়ক।


  • কমলালেবুঃ কমলালেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি যা আপনার শিশুর পুষ্টি সরবরাহ করতে সহায়তা করে এবং বুদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কমলার রসে ভিটামিন সি থাকায় আয়রন শোষণ করতে আপনার বাচ্চাকে সহযোগিতা করবে।
  • টমেটোঃ টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ই, কোলিন এবং ম্যাগনেসিয়াম এর মত এন্টিঅক্সিডেন্ট যা ভ্রুনের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য খুবই উপকারী। 
  • লেবুঃ লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ফলিক এসিড যা ভ্রুনের মস্তিষ্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গর্ভাবস্থায় যে খাবারগুলো এড়িয়ে চলবেন

গর্ভাবস্থায় এমন কিছু খাবার রয়েছে যা মা এবং বাচ্চা দুজনের জন্যই ক্ষতিকর তাই এই খাবারগুলো আমরা সকলেই এড়িয়ে চলব। চলুন জেনে নেই সেই খাবারগুলো কি কি।
  • ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া যেকোনো ধরনের ওষুধ এড়িয়ে চলুন।
  • ধূমপান ও অ্যালকোহল পান করা থেকে বিরত থাকুন। এটি বাচ্চার স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে।
  • মেয়াদ উত্তীর্ণ কোন খাবার খাওয়া যাবেনা। কারণ সেটা মা এবং বাচ্চা দুজনেরই ক্ষতি করতে পারে।
  • কোন ধরনের ফলমূল না ধুয়ে খাওয়া যাবে না। কারণ তাতে পরজীবী থাকতে পারে। যাতে মা এবং বাচ্চা দুজনের জন্যই ক্ষতিকর।
  • অতিরিক্ত চিনি এবং জাঙ্ক ফুড খাওয়া যাবেনা। কারণ এতে বাচ্চা এবং মায়ের দুজনেরই ক্ষতি হতে পারে। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ এর মত সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
  • গর্ভকালীন সময়ে অবশ্যই ডিম সিদ্ধ করে বা পরিপূর্ণভাবে রান্না করে খেতে হবে। অনেকেই কাঁচা ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে অবশ্যই কাঁচা ডিম খাওয়া যাবে না।
  • অবস্থায় অতিরিক্ত মসলাদার এবং অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • বাইরের খাবার বা ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন। ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার খান।

গর্ভবতী মায়েদের জন্য যেভাবে খাবার প্রস্তুত করবেন

গর্ভকালীন সময়ে বাচ্চা এবং মায়ের সুস্থতায় অবশ্যই কিছু নিয়ম কানুন মেনে খাবার তৈরি করা জরুরী। যেমন মাছ মাংস রান্নার সময় অবশ্যই ভালোভাবে সিদ্ধ করতে হবে। শাকসবজি রান্না করার আগে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে, তারপর রান্না করতে হবে। রান্নার পরপর খাবার খেতে হবে। বাসি পচা খাবার অবশ্যই খাওয়া যাবেনা। 

খাওয়ার আগে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। খাবার যথাযথ তাপমাত্রায় অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। ডিম ও ডিম জাতীয়য় খাবার অবশ্যই ভালোভাবে সিদ্ধ করতে হবে। যে কোন খাবার রান্না এবং পরিবেশনের পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। খাবার কখনোই উন্মুক্ত অবস্থায় রাখা যাবে না। ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
গর্ভাবস্থায়-কি-খেলে-বাচ্চা-বুদ্ধিমান-হয়

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা বুদ্ধিমান করতে কতটা খাবার খাওয়া দরকার

গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস আপনি স্বাভাবিক খাবার খেতে পারেন। তবে সময় বাড়ার পাশাপাশি আপনাকে খাবারের পরিমাণও বৃদ্ধি করতে হবে। তিন মাস থেকে ছয় মাস পর্যন্ত আপনাকে প্রতিদিন ৩৪০ ক্যালোরি বাড়তি খাবার খেতে হবে।  ছয় মাস থেকে ৯ মাস পর্যন্ত আপনাকে সর্বমোট প্রতিদিন ৪৫০ ক্যালোরি বাড়তি খাবার খেতে হবে। 

এই বাড়তি খাবারের মধ্যে আপনাকে আয়োডিন, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি-12, ভিটামিন ডি, প্রোটিন, কপার, জিংক, এন্টি অক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, ওমেগা-3 যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। আপনি প্রতিদিন খাবার একসঙ্গে বেশি করে খাওয়ার চেষ্টা না করে দিনে চার থেকে পাঁচ বার খাবার চেষ্টা করুন।একসাথে বেশি করে খাবার খেলে বাচ্চার বৃদ্ধিতে অসুবিধা হবে। 

তাই অল্প পরিমাণে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। যেন আপনার শরীরে উঠছে চাহিদা মেটে এবং বাচ্চার
গঠন সঠিকভাবে হয়।

সমসাময়িক প্রশ্ন উত্তর

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় বাচ্চার বৃদ্ধি কেমন হয়?
উত্তরঃ  গর্ভাবস্থায় পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চার হার্ট এবং রক্তনালী তৈরি হয়। সাত সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চার হার্টের স্পন্দন শুরু হয়। সাত সপ্তাহের শেষের দিকে আপনার শিশুর হাত ও পায়ের আঙ্গুল এবং বাচ্চার ফুসফুস তৈরি হতে শুরু করে।

প্রশ্নঃ কি কি খেলে গর্ভের বাচ্চার ব্রেইন ভালো হয়?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন- মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, বিভিন্ন ডাল এবং বাদাম জাতীয় খাবার খেলে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হয়। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ফলমূল এবং সবুজ শাকসবজিও খেতে পারেন। যাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফলিক এসিড রয়েছে। যা শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে এবং বুদ্ধিমত্তা বাড়াতে সহযোগিতা করে।

প্রশ্নঃ বাচ্চা পেটে থাকলে কি কি খাওয়া নিষেধ?
উত্তরঃ বাচ্চা পেটে থাকা অবস্থায় অবশ্যই অ্যালকোহল পরিত্যাগ করুন। চা এবং কফি জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। বাসি পচা খাবার এবং বাইরের খাবার বা ফাস্ট ফুড এড়িয়ে চলুন।

প্রশ্নঃ নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয়?
উত্তরঃ ৩৮ সপ্তাহে নরমাল ডেলিভারি হয়।

প্রশ্নঃ ৯ মাসের গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ানোর উপায়?
উত্তরঃ  গর্ভাবস্থায় নয় মাসের বাচ্চার ওজন বাড়ানোর জন্য আপনি দই খেতে পারেন। যাতে রয়েছে প্রিবায়োটিক, প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম। আপনি এটা ওটস এর সঙ্গে বা বিভিন্ন ফলমূলের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।

প্রশ্নঃ ভ্রুণ কি বাচ্চা হয়?
উত্তরঃ জি। ভ্রুনই একসময় আস্তে আস্তে বাচ্চাতে রূপ নেয়।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় পেট বড় কখন হয়?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস পর্যন্ত পেট একেবারে স্বাভাবিক থাকে এবং তিন মাসের পর থেকে আস্তে আস্তে পেট বড় হতে থাকে।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কোন চা খাওয়া যাবে না?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় চা বা কফি না খাওয়ায় ভালো। তবে বিশেষ করে গ্রিন টি এবং কড়া লিকার এর চা না খাওয়ায় সবথেকে উত্তম।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কি খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, আয়োডিনযুক্ত এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। যেমন- দুধ, ডিম ,মাছ, মাংস, সবজি, ফলমূল, বাদাম এবং ডাল জাতীয় খাবার।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় কোন ফল খাওয়া যাবে না?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থার শুরুতে আনারস এড়িয়ে চলুন। কারণ আনারসে ব্রোমেলেন নামক একটি এনজাইম থাকে যা গর্ভাবস্থার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

প্রশ্নঃ গর্ভাবস্থায় দুধ খাওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ গর্ভাবস্থায় দুধ খাওয়া মা ও বাচ্চার জন্য খুবই উপকারী। তাই আপনি গর্ভাবস্থায় নিয়মিত দুধ খেতে পারবেন।

লেখকের মন্তব্যঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয়

গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা বুদ্ধিমান হয় আশা করি তা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যেহেতু গর্ভাবস্থায় বাচ্চার মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে তাই এ সময় মা ও বাচ্চার সুস্থতায় মাকে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। একটি শিশুর দেহের গঠন, মস্তিষ্ক এবং পুষ্টি নির্ভর করে মায়ের সঠিক পরিমানে পুষ্টিকর খাবার গ্রহনের উপর। তাই গর্ভাবস্থায় মায়ের খাবার ভ্রুনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আরও নতুন নতুন তথ্য পেতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বঙ্গ টিপস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url